Offbeat

Unknown Facts: বলুন তো, বাঙালির প্রিয় Digha-র পুরনো নাম কী? উত্তর জানেন না 99% মানুষ

বাঙালির প্রিয় ঘোরার জায়গা দীঘার পুরনো নাম কী ছিল? ৯৯ শতাংশ মানুষ জানেন না

কথায় বলে, বাঙালি যেমন ভোজন রসিক ঠিক তেমনই ভ্রমণ প্রিয়। অফিসের কাজের হাজারো চাপ থাকলেও মাঝেমধ্যেই এক দুদিনের ছুটি নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরতে বেরিয়ে পড়েন বাঙালিরা। বরাবরই তাদের কাছে সেরা ডেস্টিনেশন ‘দিঘা’। আসলে এই সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে গেলে একদিকে যেমন খরচ হয় কম ঠিক তেমনই 2 দিনের মধ্যেই ঘুরে আসা যায়। বলা ভালো, শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা বাঙালির দিঘাই ভরসা।

সন্ধ্যাবেলা দিঘা সমুদ্রের পাড়ে বসলেই যেন দূর হয়ে যায় সমস্ত স্ট্রেস। তবে দিঘা তো বারে বারে যাচ্ছেন, কিন্তু জানেন কী এই নামটির উৎপত্তি হলো কোথা থেকে? কোন অজানা ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে এই নামের পেছনে? কবেই বা হয়েছিল দিঘা নামকরণ? সেই তথ্যই তুলে ধরা হলো আজকের এই প্রতিবেদনে।

আরও পড়ুনঃ ফুল চার্জে দেবে 80 কিমি মাইলেজ, ভালো ভালো বাইক-স্কুটারও পাত্তা পাবেনা এই ই-সাইকেলের কাছে

সে অনেক বছর আগের কথা। দেশের মাটিতে তখন রাজত্ব চালাচ্ছিলেন ইংরেজরা। বাংলা-বিহার এবং উড়িষ্যার মসনদ নবাব মীর কাসিমকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। যদিও নবাবের সাম্রাজ্যের ‘চাকলা মেদনীপুরের’ দায়ভার ছিল কোম্পানির হাতে। আর এই চাতলা মেদনীপুরের অধীনেই নাকি ছিল বীরকুল পরগনা নামক একটি অঞ্চল।

গভর্নর ওয়ারেন হেস্টিংস এর চোখে পড়েছিল সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এই এলাকা। এখানকার মনোরম আবহাওয়া যেমন আজ আমাদের আকৃষ্ট করছে ঠিক তেমনই সে সময় আকৃষ্ট করেছিল গভর্নর ওয়ারেনকে। তিনি প্রথমবার এই এলাকার নামকরণ করেন ‘ব্রাইটেন অফ ক্যালকাটা’। 1780 সালে স্ত্রীকে একটি চিঠি লিখতে গিয়ে এই এলাকার নাম তিনি উল্লেখ করেছিলেন ‘ব্রিংটন অফ ক্যালকাটা’। কলকাতার গরমের হাত থেকে ছুটি কাটাতে মাঝেমধ্যেই নাকি এই সৈকত নগরীতে ঘুরতে আসতেন ওয়ানের হেস্টিংস। এমনকি একটা সময় এখানে বাংলো নির্মাণ করেন তিনি।

যদিও পরবর্তীতে সামুদ্রিক জলোচ্ছাসে ডুবে যায় সেই বাংলো। পরবর্তীতে 1923 সালে জন ফ্রান্স নিক নামক এক ইংরেজ ব্যবসায়ী, এই সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে বাংলো বানিয়ে দিঘায় বসবাস শুরু করেন। আস্তে আস্তে বাড়তে থাকে এর জনপ্রিয়তা। এ তো গেল ব্রিটিশ আমলের কথা। যদিও সে সময় কিন্তু এই সমুদ্র সৈকত দিঘা নামে পরিচিতি পায়নি। বরং সে সময় নাম ছিল ‘বীরকুল’।

স্বাধীনতা পরবর্তী সময় এই বীরকুল পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার অনুরোধ নিয়ে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর বিধান চন্দ্র রায়ের দ্বারস্থ হন স্মিথ। 1950 সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠে আজকের দিঘা। আর সেই থেকেই বাঙালির প্রিয় ডেসটিনেশান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এই জায়গা।

প্রাণের চেয়েও প্রিয় দিঘা। আগের তুলনায় অনেকটাই বদলে গিয়েছে এই পর্যটন কেন্দ্র। সময় যত এগোচ্ছে ততই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে সমুদ্র সৈকত। সারা বছর এখানে ভিড় জমান লাখ লাখ পর্যটক। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদ্যোগে নতুনভাবে সেজে উঠছে দিঘা। বর্তমানে সেখানে তৈরি হচ্ছে পুরীর আদলে জগন্নাথ মন্দির। যদিও বাঙালির প্রিয় ডেস্টিনেশন দিঘা হলেও অনেকেই জানতেন না এর পুরনো নাম বীরকুল।