মনটা একটু ঘুরতে যেতে চাইছে। তবে অফিসের বসের দিকে তাকালেও তিনি বলে দিচ্ছেন ছুটি হবে না। চিন্তা নেই অগাস্ট মাসে বেশ কিছু ছুটি আছে। চেষ্টা করতেই পারেন সেই সময়ে অন্তত দিন দুয়েকের জন্য সমুদ্রর সম্মুখীন হতে। দীঘা-পুরী তো যাওয়া হয়েই থাকে। তবে এবার হোক নতুন কিছু। এই যেমন ধরুন ওড়িষ্যা রাজ্যের কোনার্ক সি বিচ। একি আপনি এর নামই শোনেননি এর আগে। বেশ নিরিবিলি ও ভিড় কম এই কোনার্ক -এ জীবনের মূল্যবান দুটি দিন কাটিয়ে দেখতে পারেন। চিন্তা নেই আসুন আজ আপনাদের এই দুর্দান্ত জায়গাটির সম্পর্কে জানাবো যা এর আগে কোনোদিন হয়তো শুনেও দেখেননি।
কিভাবে যাবেন – পুরী থেকে কনার্কের দূরত্ব মাত্র ৩৩ কিলোমিটার। হাওড়া থেকে পুরী যাওয়ার একাধিক ট্রেন আছে। শিয়ালদা বা কলকাতা স্টেশন থেকেও যাওয়া যায়। ট্রেনে নেমে পরুন পুরী স্টেশনে। বাঙালির চিরচেনা পুরী ওড়িশাতে থাকলেও সেখান থেকে একটা গাড়ি নিয়ে চলে যান কোনার্ক। আবার বিমান পথে ভুবনেশ্বর হয়েও কোনার্ক পৌঁছাতে পারবেন। তবে বিমানবন্দর থেকে কনার্কের দূরত্ব অনেকখানি। পুরীর মতো এতো ভিড় ও হই-হট্টগোল কিছুই নেই সেখানে।
কোথায় থাকবেন – পুরীর থেকে অপেক্ষাকৃত সস্তা কোনার্ক। তাই হোটেল আগে থেকে বুক করে রাখাই ভালো হবে। এখানে পৌঁছেও বেছে নিতে পারেন পছন্দের থাকার জায়গা। থাকা ও খাওয়া এখন একই হোটেলে সস্তায় পাওয়া যায়। তাই চাইলে আপনি একসাথেও খেতে পারেন।
কি কি দেখবেন – পুরীর উত্তর-পূর্ব কোণে অবস্থিত এবং ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে বিবেচিত কোনার্ক সূর্য মন্দির। প্রথমেই সেখানে দর্শন করে পুজো দেবেন। কার্যত এই মন্দির নিয়ে ইতিহাসের কোনো শেষ নেই।
মন্দিরের ঠিক বিপরীতে বালির লম্বা এক রাস্তা সেটাই সরাসরি চলে গেছে বিচের দিকে। কিছু মানুষ সমুদ্রের ঢেউকে আপন করে নিচ্ছে। এটি সেই বিখ্যাত কোনার্ক সি বিচ। তবে ওড়িষ্যার লোকেরা কিন্তু এটাকে বলেন ‘আস্তারাঙ্গা সমুদ্র সৈকত’। উড়িষ্যা রাজ্যে অবস্থিত সবচেয়ে সুন্দর সৈকতগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়।
বীচে যদি সকাল ও সন্ধের সময় সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দেখতে পারেন তাহলে যেন এ জীবন আপনার স্বার্থক হয়ে যাবে। বিভিন্ন ওয়াটার স্পোর্টস চালু হয়েছে সেগুলি মনে সাহস থাকলে অবশ্যই চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
কোনার্ক -র বিখ্যাত এএসআই যাদুঘর ঘুরে দেখতে ভুলবেন না। কার্যত ১ কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থিত। জাদুঘরে প্রায় ২৫০ টি বিভিন্ন ধরণের প্রাচীন জিনিস রয়েছে যা সূর্য মন্দির থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এএসআই মিউজিয়ামের প্রবেশ মূল্য সাধারণ মানুষের জন্য ১০ টাকা। তবে বিদেশিদের জন্য সেটা ১০০ টাকা। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত জাদুঘর খোলা থাকে।
হাতে সময় থাকলে নির্মল ঝোরা, তারাতারিণী মন্দির, রম্ভা, চিল্কা হ্রদ, বারাকুল, কোনারকের মন্দির এসব জায়গা ঘুরে দেখতে পারবেন।
খরচ – পুরী বাদ দিয়ে যদি কোনার্ক ও প্রতিবেদনে উল্লিখিত অন্যান্য জায়গা গুলি ঘোরেন তাহলে আপনার ৫০০০ টাকার মধ্যে ভ্রমণ সম্পূর্ণ হোয়ে যাওয়ার কথা।
