
নারীর কেশেতেই বেশ। একথা আমরা প্রায়শই মা-ঠাকুমাদের মুখে শুনে থাকি। একঢাল লম্বা, সুন্দর, কালো, ঘন চুল কার না পছন্দ বলুন তো দেখি? এখনকার সমাজ পোশাক বলুন বা স্টাইল সবদিক থেকে থেকে আগের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত। আর তাইতো বিভিন্ন সাজগোজের পাশাপাশি চুলেরও নানান রকমের স্টাইল তারা করে থাকেন। তাতে স্টাইলিশ দেখালেও আখেরে ক্ষতি হচ্ছে অনেকটা। আর এসব কারণে চুল পড়া, ডগা ফাটা এসব সমস্যা তো লেগেই আছে।
বলতে গেলে এসব ছাড়াও নিত্যনৈমিত্তিক নিয়মে যেন চুল পরেই চলে। মার্কেটের নামীদামী ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বলুন বা ঘরোয়া টোটকা কোনোকিছুই যেন চুল পড়ায় লাগাম টানতে পারেনা। তবে, যে শুধু অতিরিক্ত স্টাইলিং করার কারণে চুল ঝড়ে তা কিন্তু একেবারেই নয়। চিকিৎসকদের মতে আরও বেশ কিছু কিছু কারণে চুল পরে। চলুন প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক সেগুলি কি কি
১.জীবনযাত্রা
আজকালকার জেনারেশনের জীবনযাত্রা বড়ই উৎশৃঙ্খল। তারা কখন খান, কখন ঘুমান তার কোনো হিসেব থাকেনা। আর এসব কারণেই চুল পড়ে।
২.হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
অনেকসময় অনেক মহিলার শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়। আর যারকারণে চুল ঝরে যায়।
৩.অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়া
এখনকার ছেলেমেয়েদের পছন্দের খাদ্যতালিকায় প্রথমেই রয়েছে ফাস্টফুড। তারা ঘরোয়া রান্নাকরা খাবার, শাকসবজি, ফলমূলের চেয়েও বাইরের পিৎজা, বার্গার এসব খেতে বেশি পছন্দ করেন। আর এসব অস্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়াও চুল পরার অন্যতম একটি কারণ।
৪.শারীরিক অসুস্থতা
কোনো মানুষের যদি শারীরিক কোনো অসুস্থতা থাকে তাহলে সেই কারণেও চুল পড়তে পারে।
৫.স্ট্রেস
আগেকার মানুষজন যতটাই বেশি সহজ সরল ছিল এখনকার মানুষজন ততটাই বেশি জটিল। আর তাইতো আগের তুলনায় এখনকার মানুষের জীবনও অনেক বেশি কঠিন। জীবন বলুন বা জীবিকা সবনিয়েই তাদের মধ্যে দোলাচল চলে। আর এই কারণে যথারীতি তারা স্ট্রেসে থাকেন। আর যা কিনা চুল পড়ার মোক্ষম একটি কারণ।
৬.বংশগত কারণ
উপরের এসব কারণ ছাড়াও বংশগত কারণে অনেকের চুল পড়ে। অনেকেই আছেন যাদের কিনা জিনগত কারণে কৈশোরকাল থেকেই চুল পড়ার সমস্যা শুরু হয়।
তাহলে তো এবার জেনে গেলেন ঠিক কি কি কারণে একজন মানুষের চুল পড়তে পারে। কিন্তু এই চুলপড়া থেকে মুক্তির উপায় কি? আজকের এই প্রতিবেদনে সেই নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো। প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, নির্দিষ্ট কিছু প্রাকৃতিক উপাদান রয়েছে যা কিনা নিমেষেই আপনারা চুল পড়া আটকাকে পারে। আর তারমধ্যে কার্যকারী উপাদান হল ‛মৌরি’। এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। যা চুলের ফলিকলে পুষ্টি জুগিয়ে চুলকে আরও শক্তিশালী করে তোলে। যার ফলে নিমেষেই চুলপড়া বন্ধ হয়ে যায়।
তবে, এই মৌরিকে কিভাবে চুল পড়া বন্ধের জন্য কাজে লাগাবেন সেটা জেনে নেওয়া কিন্তু ভীষণ দরকার। চলুন তবে সেটাই এবার জেনে নেওয়া যাক।
চুলের যত্নে মৌরি ব্যবহারের পদ্ধতি
১.প্রথমেই ১ টেবিল চামচ মৌরিকে সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন সকালে জল ছেঁকে নিয়ে মৌরিকে পেস্ট করে নিতে হবে। এরপর মৌরির পেস্টের সঙ্গে টকদই মিশিয়ে একটি প্যাক বানিয়ে নিন। তারপর সারা মাথায় এই প্যাকটি ভালো করে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন। এরপর হালকা গরমজল দিয়ে মাথা ধুঁয়ে শুকিয়ে নিন। সপ্তাহে দুদিন এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।
২.প্রথমেই কয়েকচামচ মৌরিকে জলে দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন। এরপর জলটা ঠান্ডা হয়ে গেলে ওই জল দিয়ে চুলটাকে ধুঁয়ে নিন। এতে দেখবেন আপনার চুলপড়া অনেকাংশেই কমে গিয়েছে।
তবে, এসব ছাড়াও চুল পড়া আটকাতে চাইলে প্রচুর পরিমানে জলপান করতে হবে। এমনকি নিয়ম করে শ্যাম্পু-কন্ডিশনার করা থেকে একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে চলতে হবে। তাহলেই আপনার চুল পড়া একেবারে কমে যাবে।